শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪
ঢাকা শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
The Daily Post

লাম্পি স্কিন রোগের ভ্যাকসিন সংকটে মরছে গরু 

কিশোরগঞ্জ (নীলফামারী) প্রতিনিধি

লাম্পি স্কিন রোগের ভ্যাকসিন সংকটে মরছে গরু 

নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলায় লাম্পি স্কিন রোগের ভ্যাকসিন সংকটের কারণে দিন দিন এই রোগে আক্রান্ত গরু সংখ্যা বেড়েই চলেছে। রোগটিতে আক্রান্ত হয়ে গত ১০ দিনে উত্তর দুরাকুটি গ্রামে ৭ টি, পুটিমারীতে ৫টি ও নিতাই ইউনিয়নে ২ টি গরুর মৃত্যু হয়েছে। 

ভয়াবহ এইরোগে লাখ লাখ টাকার গরু হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়ছে গরুর মালিক। তবে উপজেলা প্রাণীসম্পদ দপ্তর ভ্যাকসিন সংকটের বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে বলছে কিশোরগঞ্জ উপজেলায় যে পরিমান ভ্যাকসিন বরাদ্দ ছিল গবাদিপশুর  সংখ্যা অনুযায়ী চাহিদার তুলনায় সেটুকু সামঞ্জস্যপুর্ণ নয়। 

উপজেলা প্রাণীসম্পদ দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, কিশোরগঞ্জ উপজেলায় গবাদিপশুর সংখ্যা প্রায় এক লাখ ৩০ হাজার কিন্তু লাম্পি স্কিন রোগের ভ্যাকসিন দেয়া হয়েছে মাত্র ১২ হাজার ৪শ গবাদীপশুকে। এদিকে বিভিন্ন গ্রামে গিয়ে এই রোগে আক্রান্ত গরুর মালিকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, আক্রান্ত গরুর চিকিৎসা করাতে গিয়ে প্রতিটি গরুর জন্য ব্যয় হচ্ছে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা। ধান ও অন্য ফসল বিক্রি করে গরুর মালিকরা গরুর চিকিৎসা করে গরু বাঁচাতে না পেরে সর্বশান্ত হয়ে যাচ্ছে। 

বিভিন্ন গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে, লাম্পি স্কিন রোগ মহামারি আকার ধারণ করেছে। গরুর মালিক ও খামারিদের কাছ থেকে জানা গেছে, এনজিও থেকে লোন নিয়ে অনেক কৃষক কোরবানির ইদের জন্য গরুগুলো প্রস্তুত করেছিলেন। হঠাৎ গরুগুলো ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর ধীরে ধীরে গরুগুলোর মৃত্যু হয়। 

কৃষকরা জানিয়েছেন এই মহাবিপদে প্রাণীসম্পদ বিভাগের কারো কোন সহায়তা না পাওয়ায় প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত গ্রাম্য ডাক্তার দিয়ে গরুর চিকিৎসা করাতে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা করে লাগলে গরু বাঁচাতে পারেননি তারা। 

বাহাগিলি ইউনিয়নের উত্তর দুরাকুটি পশ্চিমপাড়া গ্রামের গরু খামারি রবিউল ইসলাম, ওলিয়ার রহমান, নুরুল হক, মজিদুল ইসলাম জানান, আমাদের গ্রামে এক সপ্তাহের ব্যবধানে ৭ টি গরু মারা গেছে। একটি করে গরুর চিকিৎসা করাতে ৫ হাজার থেকে ২০ হাজার পর্যন্ত টাকা ব্যয় হয়েছে। 

এদিকে ভ্যাটেরেনারি সার্জন ডা. মো. নাহিদ সুলতানের কাছে লাম্পিস্কিন রোগে আক্রান্ত গরুর মৃত্যুর বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই রোগে আক্রান্ত মৃত গরুর সংখ্যা শতকরা এক থেকে দুইভাগ। সরকারি হিসাব অনুযায়ী এই রোগে কতগুলো গরু মারা গেছে প্রশ্ন করলে তিনি উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তার সাথে কথা বলতে বলেন। 

মুঠোফোনে উপজেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা নুরুল আজীজ বলেন, অলরেডি ১২ হাজার ৪শ গরুকে ভ্যাকসিন দেয়া হয়েছে। বাকি গরুর ভ্যাকসিন দেননি কেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, চাহিদার তুলনায় সামঞ্জস্য নয় তাই দেয়া হয়নি। তিনি আরো বলেন, এটি কমন ব্যাপার বর্তমানে এটি সারাদেশে ছড়িয়ে পড়েছে।  

টিএইচ